২০১৮ সালের বিধানসভা নির্বাচনের পর স্বঘোষিত জনদরদি’রা, যারা আদতে বিড়াল কিন্তু বাঘের খোলস পরে তর্জন গর্জন করে নিজেরা স্বঘোষিত জনদরদি সেজে যুবরাজনগর চষে বেড়াতেন তাঁরা তাঁদের খোলস ঝেড়ে ফেলে ঝুলির বেড়াল, ঝুলিতেই ঢুকে পরে। তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ এমন আছেন যারা রাজনৈতিক সন্ন্যাস নিয়ে নেন! “আমি আর রাজনীতি করতাম নায়, রাজনীতি বালা নায়” বলে আকাশ বাতাস মুখরিত করেন। বিরোধী শিবিরে থেকে নিজের ব্যক্তিত্বের জোরে যিনি ওয়ার্ড মেম্বার হতে পারেন নি, তিনিই আবার সিপিএম এর জোরে নির্বাচনে জিতে স্বঘোষিত ব্যাক্তিত্ববান জনদরদি নেতা সেজে মানুষকে বোকা বানানোর ব্যবসা জোর কদমে চালিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু তাঁদের ভাঁড়ে মা ভবানী, ২০১৮ সালে ঘটিবাটি সহ সিপিএম এর বিদায় হল, আর স্বঘোষিত জনদরদিদের নেতাগিরিতে ভাটা পড়লো! স্বঘোষিত জনদরদি’রা, জনদরদ ঝেড়েঝুড়ে ফেলে দিয়ে ঝুলির বেড়াল, ঝুলিতেই ঢুকে দিব্বি ৫টা বছর কাটিয়ে দিলেন!

তারপর ৫টা বছর কেটে গেল, স্বঘোষিত জনদরদি’রা ঝুলির বেড়াল, ঝুলি থেকে বের হওয়া তো দুরের কথা, ৫ বছরে একটা শব্দও উচ্চারণ করেন নি! যেই না বিধানসভা নির্বাচন-২০২৩ এগিয়ে আসতে শুরু করলো, তেমনি ধীরে ধীরে ঝুলির বেড়াল, ঝুলি থেকে তাঁদের মাথা বের করতে শুরু করলেন! যখন দেখলেন যে বিজেপি’র পুনরায় ক্ষমতায় আসা প্রশ্নের মুখে, তখন এমন কিছু মানুষকেও হাটে, ঘাটে, মাঠে দেখা গেলো যারা ২০১৮ পর রাজনৈতিক সন্ন্যাস নিয়ে নিয়েছিলেন! জনদরদিদের জনদরদ আবার উতলে উঠলো, হাটে, ঘাটে, মাঠে বলে বেড়াতে লাগলেন বিজেপি, চোর-ডাকাত বদমাশ, আমাদের ভোটদিন আমরা সবাই সাধু! আমরা ক্ষমতায় এলেই সব চোর ডাকাতদের জেলে ভরে দিয়ে দুর্নীতি মুক্ত রাজ্য গঠন করবো! তাঁদের জনদরদ আর মায়া কান্না দেখে সূর্পণখাও লজ্জা পায় এমন অবস্থা! এককথায়, ঝুলি থেকে বেড়াল, বেরিয়েই বলে ঠাণ্ডা মানে কোকাকোলা!!!

কিন্তু যেই না বিধানসভা নির্বাচনে পুনরায় বিজেপি ক্ষমতায় ফিরল, সাথে সাথেই ঝুলির বেড়াল, ঝুলিতেই ঢোকে পড়লো! এবার অবশ্য ডায়লগ চেঞ্জ হয়েছে, নতুন দু-চারটে ডায়লগ চিন থেকে আমদানি করা হয়েছে, আমি বাবা ভদ্রলোক কেউর লগে লাগালাগি করতাম কেনে !!! ও’রে বাবা’রে, কি কিউট ডায়লগ তাই না! স্বঘোষিত জনদরদিদের কাছে জনদরদ আর মায়া কান্না এখন লাগালাগি হয়ে গেল আর নির্বাচনের মুহূর্তে বিজেপিকে চোর-ডাকাত বদমাশ বলে হাটে, ঘাটে, মাঠে ভোট চেয়েছিলেন, নির্বাচনে হেরে গিয়ে, সব জনদরদ আর মায়া কান্না ঝেরে ফেলে ঝুলির বেড়াল, ঝুলিতেই ঢুকে পড়েছে আগামী ৫বছরের জন্য।

যদিও যুবরাজনগরে সিপিএম জিতেছে কিন্তু নির্বাচনের পর থেকে যুবরাজনগরের বিধায়ক নিখুজ! যুবরাজনগরের লাগামহীন দুর্নীতির জন্য শাসকদল যতটুকু দায়ী, বিরোধীদল গুলিও ততটুকু দায়ী। কারন বিগত পাঁচ বছরে যুবরাজনগর ব্লক ও শ্রীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের দুর্নীতি নিয়ে কোন আন্দোলন, কোন প্রতিবাদ বা কোন পদক্ষেপ নেওয়া তো দুরের কথা, দুর্নীতি নিয়ে একটা শব্দও উচ্চারন করেন নি আর করবেন বলে আশাও করা যায় না! এই হচ্ছে স্বঘোষিত জনদরদিদের আসল চেহারা!!! বাস্তব সত্য এই যে, জনগণের স্বার্থে রাজনীতি নয়, রাজনৈতিক দল আর ক্ষমতার স্বার্থে রাজনীতি।

আমার এই কথা গুলি অনেকেরই গায়ে লাগবে, চটে গিয়ে আমাকে দু-চারটা গালাগাল দেবেন, গর্তে বসে আমার সমালোচনাও করবেন! অবশ্য তাঁতে আমার কিছুই যায় আসে না! বিরোধীদল গুলির জনদরদ আর মায়া কান্না দেখে সূর্পণখাও লজ্জা পায়!

ORM008115CW03812


full-width