কর্মের এই নিষ্টুরতা বোধ হয়, মানুষের কঠোর সান্ত্বনা!

GK Dutta
0

যতো বিচিত্র রকমের কাজ হাতে নিচ্ছি ততই কাজ জিনিষটার উপর আমার শ্রদ্ধা বাড়ছে। কর্ম যে অতি উৎকৃষ্ট পদার্থ সেটা কেবল পুঁথির উপদেশ রুপে জানতাম – এখন জীবনের অনুভব করছি- কাজের মধ্যে পুরুষের যথার্থ চরিতার্থতা, কাজের মধ্যে দিয়ে জিনিষ চিনি, মানুষ চিনি, বৃহৎ কর্মক্ষেত্রে সত্যের সঙ্গে মুখ-মুখি ঘটে। দেশ-দেশান্তরে লোক যেখানে বহুদূর থেকেও মিলছে, সেখানে আজ আমি নেমেছি। মানুষের পরস্পর শৃঙ্খলতা বদ্ধ, এই একটা প্রয়োজনের চীরসম্বন্ধ। কর্মের এই সুদূর প্রসারিত উদার্য আমার প্রত্যক্ষ গোচর হয়েছে।

কাজের একটা মহাত্ম এই যে, কাজের খাতিরে নিজের ব্যাক্তিগত সুখ দুঃখকে অবজ্ঞা করে, যথোচিত সংক্ষিপ্ত করে চলতে হয়- কঠিন কর্মক্ষেত্রে মার্মান্তিক শোকেরও অবসর নেই। অবসরটা নিয়েও ফল কী? কর্ম যদি মানুষকে বৃথা অনুশোচনার বন্ধন থেকে মুক্ত করে সন্মুখের পথে প্রবাহিত করে নিয়ে যেতে পারে, তবেই ভালো, যা হবার তা হবেই- যা হতে পারে তা হাতের কাছে প্রস্তূত। যে মানুষ মরে গেছে তার জন্য শোক ছাড়া কিছুই করতে পারিনে, কিন্তু যে বেঁচে আছে তার জন্য ছোট বড়ো অনেক কাজই তাকিয়ে আছে। কাজের সংসারের দিকে চেয়ে দেখি, কেউ চাকরি করছে, কেউ মজুরি করছে, অথছ এই প্রকান্ড কর্মক্ষেত্রের ঠিক নিচে দিয়ে কতো মৃত্য, কতো দুঃখ অন্তঃশীলায় বয়ে যাচ্ছে, কিন্তু তার আবরু নষ্ট হতে পারছেনা, যদি কেউ অসংযত হয়ে বেরিয়ে আসে তাহলে কর্মচক্র একেবারেইযে বন্ধ হয়ে যাবে তা নয়। ব্যাক্তিগত সুখ-দুঃখটা নীচে দিকে ছোটে, তার উপরে অত্যন্ত কঠিন পাথরের ব্রীজ বাঁধা, সেই ব্রীজের উপর দিয়ে লক্ষ লোকের পুর্ন কর্মের রেল গাড়ী আপন লৌহ পথে হু হু শব্দে চলে যায়, নির্দিষ্ট স্টেশনটি ছাড়া আর কোথাও এক মুহুর্তের জন্য থামেনা, কর্মের এই নিষ্টুরতা বোধ হয়, মানুষের কঠোর সান্ত্বনা।

অন্যের কথা হলফ করে বলতে পারবোনা- তবে আমার জন্য তাই-ই…?
full-width

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Check Now
Ok, Go it!